gramerkagoj
শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৬ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
এই প্রথম নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
প্রকাশ : শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারি , ২০২৪, ০৬:৩৪:০০ পিএম
কাগজ ডেস্ক:
GK_2024-01-26_65b3a882ccb96.jpg

বিশ্বে প্রথমবারের মতো নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অবশেষে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে নতুন পদ্ধতির ব্যবহার করলো দেশটি। বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে আলাবামা অঙ্গরাজ্যে হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত কেনেথ ইউজিন স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

অক্সিজেন ছাড়া নাইট্রোজেন গ্যাসে নিঃশ্বাস নেওয়ার ফলে শরীরের কোষগুলো ভেঙে যায় এবং একপর্যায়ে মৃত্যু ঘটে।

এ ধরনের মৃত্যু ‘নিষ্ঠুর এবং অস্বাভাবিক’ শাস্তি দাবি করে আদালতে দীর্র্ঘদিন লড়াই চালিয়েছিলেন ৫৮ বছর বয়সী স্মিথ। কিন্তু মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট এবং একটি কেন্দ্রীয় আপিল আদালতে সবশেষ আবেদন দুটি প্রত্যাখ্যাত হলে নাইট্রোজেনে মৃত্যুই অবধারিত হয়ে ওঠে এ আসামির।

টিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, আলাবামার গভর্নর কে আইভি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, নাইট্রোজেন গ্যাসের সাহায্যে শ্বাস রোধ করে প্রথম মৃত্যুদণ্ড সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মাধ্যম দেশ মারণ ইনজেকশনের একটি সহজ বিকল্পের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। অঙ্গরাজ্য সরকারের দাবি, এটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সবচেয়ে কম বেদনাদায়ক ও মানবিক পদ্ধতি হিসেবে মানুষের কাছে পরিচিত। মূলত মারণ ইনজেকশন ব্যবহারের বদলে মৃত্যুদণ্ডের পদ্ধতি আরও সহজ করতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

২০২২ সালে বিষাক্ত ইনজেকশন দিয়ে স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিল আলাবামা প্রশাসন। ১৯৮৯ সালে টাকা নিয়ে এক ধর্ম প্রচারকের স্ত্রীকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন তিনি।

ডেথ পেনাল্টি ইনফরমেশন সেন্টারের মতে, পৃথিবীতে স্মিথই প্রথম ব্যক্তি, যাকে বিশুদ্ধ নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো।

আলাবামা এবং যুক্তরাষ্ট্রের আরও দুটি অঙ্গরাজ্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে নাইট্রোজেন হাইপোক্সিয়ার ব্যবহার অনুমোদন করেছে। মূলত প্রাণঘাতী ইনজেকশনে ব্যবহৃত ওষুধ খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সাক্ষী হওয়ার জন্য গণমাধ্যমের পাঁচ সদস্যকে অ্যাটমোরের হলম্যান কারেকশনাল ফ্যাসিলিটিতে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগে স্মিথ বলেন, আজ রাতে মানবতাকে একধাপ পিছিয়ে যেতে বাধ্য করলো আলাবামা। আমাকে সমর্থন করার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।

এরপর মুখোশের মধ্যে গ্যাস ঢুকতে শুরু করলে স্মিথ হাসিমুখে পরিবারের সদস্যদের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়েন এবং ‘তোমাদের ভালোবাসি’ বলে ইশারা করেন।

পরবর্তী দুই থেকে চার মিনিট তাকে ভংকরভাবে শরীর মোচড়াতে এবং প্রায় পাঁচ মিনিট প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট পেতে দেখেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। স্থানীয় সময় রাত ৮টা ২৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আলাবামার গভর্নর কে আইভে এক বিবৃতিতে স্মিথের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন,৩০ বছরেরও বেশি সময় পরে এবং সিস্টেম নিয়ে ক্রমাগত খেলা করার পর স্মিথ অবশেষে তার জঘন্য অপরাধের সাজা পেয়েছেন।

স্মিথের অপরাধ:

১৯৮৮ সালের মার্চ মাসে এক হাজার মার্কিন ডলারের বিনিময়ে এলিজাবেথ সেনেটকে হত্যার চুক্তি করেছিলেন স্মিথ ও আরেক ভাড়াটে খুনি।

৪৫ বছর বয়সী ওই নারীকে ফায়ারপ্লেসে ব্যবহৃত লৌহদণ্ড দিয়ে নির্দয়ভাবে পেটানো হয় এবং তার বুকে ও ঘাঁড়ে আঘাত করা হয়। এলিজাবেথের মৃত্যুকে ডাকাতদের হাতে নিহত দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছিল।

দেনার দায়ে জর্জরিত স্বামী চার্লস সেনেট বিমার টাকা পাওয়ার লোভে লোক ভাড়া করে এলিজাবেথকে হত্যা করিয়েছিলেন। তদন্তকারীরা সেটি ধরে ফেলায় পরে আত্মহত্যা করেন তিনি। স্মিথের সহযোগী হত্যাকারী জন ফরেস্ট পার্কারের মৃত্যুদণ্ড ২০১০ সালে কার্যকর করা হয়।

সূত্র: বিবিসি

আরও খবর

🔝