gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj

❒ যশোর জেনারেল হাসপাতাল

ঠান্ডায় ভর্তি রোগীদের পাশাপাশি চাপ বেড়েছে বহির্বিভাগে
প্রকাশ : রবিবার, ১৪ জানুয়ারি , ২০২৪, ০৯:৪৪:০০ পিএম , আপডেট : বুধবার, ২৪ এপ্রিল , ২০২৪, ০৩:০১:২৯ পিএম
আশিকুর রহমান শিমুল:
GK_2024-01-14_65a4023b4c8ee.jpg

যশোরে অপরিবর্তিত রয়েছে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা। চাপ বেড়েছে বহির্বিভাগেও। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১২ জন। এ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫০ জন। অপরদিকে পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে শীতজনিত রোগে ২১ জন ভর্তি রয়েছেন। এদিনে শিশু বহির্বিভাগ থেকে একশ’ ৬২ জন ও মেডিসিন বহির্বিভাগ থেকে একশ’ ৫২ জন চিকিৎসা নিয়েছে। যা গত এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ।
হাসপাতাল সূত্র যা বলছে:
ঠান্ডাজনিত রোগে প্রতি এক ঘণ্টায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে এক থেকে দু’জন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে শিশু ওয়ার্ডে তিনশ’ ৭২, পুরুষ এবং মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে একশ’ ৩৯ জন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। গত পাঁচ দিনে শিশু বহির্বিভাগে পাঁচশ’ ২৮ জন ও মেডিসিন বহির্বিভাগ থেকে দুইশ’ ৩২ জন চিকিৎসা নিয়েছে। এদের মধ্যে শিশু বহির্বিভাগে ১৪ জানুয়ারি একশ’ ৬২, ১৩ জানুয়ারি ৯৭, ১২ জানুয়ারি ৬৭, ১১ জানুয়ারি একশ’ ও ১০ জানুয়ারি একশ’ দু’জন চিকিৎসা নিয়েছে। অপরদিকে, মেডিসিন বহির্বিভাগ থেকে ১৪ জানুয়ারি ৬৫, ১৩ জানুয়ারি ৪৯, ১২ জানুয়ারি ২৭, ১১ জানুয়ারি ৫০ ও ১০ জানুয়ারি ৪১ জন চিকিৎসা নিয়েছে।
সরেজমিন যা দেখা গেলো:
যশোর জেনারেল হাসপাতালে সরেজমিনে দেখা গেছে স্বাভাবিকের তুলনায় রোগীর চাপ বেড়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা বেশি। ওয়ার্ড রোগীতে ভর্তি। কোনো বেড-কেবিন খালি নেই। অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের কোথাও নতুন আসা রোগীদের জন্য বেড খালি না থাকায় বিপাকে পড়তে হচ্ছে মানুষদের। অনেকে বাড়তি বেড বরাদ্দের দাবিও তুলেছেন।
রোগীর স্বজনরা যা বলছেন:
যশোর সদর উপজেলার ঘুরুলিয়া গ্রামের এক শিশু রোগীর মা নার্গিস বেগম বলেন, ‘গত দু’দিন ধরে মেয়ে তাবাসসুম ডায়রিয়ায় আক্রান্ত থাকায় হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার ভর্তি করে দিয়েছেন। ওয়ার্ডে জায়গা না পাওয়ায় অন্য রোগীর বেডে বসে মেয়েকে স্যালাইন দেয়া হচ্ছে।’
চৌগাছা উপজেলার কাদবিলা গ্রামের সুরুজ মিয়া জানান, শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত তিনদিন ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত বেড পাননি। ক্লিনিকে চিকিৎসা করার সামর্থ না থাকায় ঠান্ডায় হাসপাতালের মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। ঠান্ডা মেঝেতে থেকে তিনি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে জানান।
যা বললেন চিকিৎসক:
যশোর জেনারেল হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ জসীম উদ্দীন জানান, শীতজনিত অন্যান্য রোগের পাশাপাশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। অসচেতনতার কারণে শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। এতে ঝুঁকিও বাড়ছে। নিউমোনিয়া আক্রান্ত অনেককেই দেরী করে হাসপাতালে আনা হচ্ছে। শিশুদের জ্বর, সর্দি, কাশি দেখা দিলেই নিকটস্থ হাসপাতালে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ঠান্ডায় যা এড়িয়ে চলতে হবে:
শিশু বা বয়স্ক থেকে শুরু করে সবাইকে শীতের সময় কয়েকটি বিষয় এড়িয়ে চলতে হবে। প্রথমত, শীতের ঠাণ্ডা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হবে। গরম কাপড় পড়তে হবে, কান ও হাত ঠেকে রাখতে হবে, গলায় মাফলার ব্যবহার করতে হবে। গোসল বা হাতমুখ ধোয়া থেকে শুরু করে সবসময়ে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। খাবার পানির ক্ষেত্রে হালকা গরম পানি মিশিয়ে খেতে পারলে ভালো। এ সময় ঠাণ্ডা খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
আরও যা করা উচিত:
শীতের সময়েও প্রচুর পানি খেতে হবে। এছাড়া ভিটামিন সি রয়েছে এমন খাবার যেমন জলপাই, কমলা, লেবু ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে। এগুলো একপ্রকার প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে। শিশুরা অনেক সময় শরীরে গরম কাপড় রাখে না বা খুলে ফেলে। তাই তাদের দিকে সতর্ক নজর রাখা উচিত। শীতকালেও নিয়মিতভাবে শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করতে হবে।

আরও খবর

🔝