gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
সমাজ ব্যবস্থাটাই হবে স্মার্ট : শেখ হাসিনা
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারি , ২০২৪, ০৮:০৩:০০ পিএম , আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল , ২০২৪, ১০:৪৮:৩০ এ এম
কাগজ ডেস্ক:
GK_2024-01-02_65941a0c96d84.jpg

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তরুণ সমাজ ডিজিটাল ডিভাইস কম্পিউটার ব্যবহার করবে। নিজেদের দক্ষতা তুলে ধরবে। স্মার্ট জনশক্তি হবে, স্মার্ট সরকার হবে, স্মার্ট অর্থনীতি হবে। সমাজ ব্যবস্থাটাই হবে স্মার্ট।

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে ফরিদপুর পৌরশহরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার হবে না। অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতি হন জিয়াউর রহমান। দেশের বাইরে রিফিউজি হিসেবে আমাদের থাকতে হয়েছিল। ছয় বছর পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসার সুযোগ পাই। সমস্ত দেশে ঘুরে বেড়াই। দেশের উন্নয়নে কাজ করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাই।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ৭১-এ মুক্তিযোদ্ধারা নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন। তাদের সালাম জানাই। আপনাদের আত্মত্যাগে আমাদের দেশকে পেয়েছি। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। দেশ স্বাধীন হয়। ইয়াহিয়ার পতন হয়। ভুট্টু ক্ষমতায় আসে। আন্তর্জাতিক চাপে বাধ্য হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে।


‘তিনি দেশে ফিরে এক যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ দেখেন। রাস্তা ঘাট নেই। সবই ভাঙা। এ দেশে যুদ্ধকালীন সময় ফসল হয়নি, গোলায় এক ফোটা ধান ছিল না। কারণ, পাকিস্তানিরা আগুন দিয়ে গ্রামের পর গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিল। এক পয়সাও রিজার্ভ ছিল না। শূন্য হাতে ধ্বংস স্তূপে দাঁড়িয়ে একটার পর একটা গড়তে শুরু করেন জাতির পিতা। তিন বছর সাত মাসে জাতিসংঘে দেশকে স্বীকৃতি এনে দিয়েছেন তিনি,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছেন বলেই সরকার গঠন করে দেশ সেবার সুযোগ পেয়েছি। ২১ বছর পর সরকারে এসেছি। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি। বিদ্যুৎ চাহিদা ৩০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করি। মানুষের জীবনে স্বস্তি ফিরে আসে। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসে। তারা ক্ষমতায় আসা মানে দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ, লুটপাট আর দুঃশাসন। গ্যাস বিক্রি করতে দেইনি বলে আমাকে ক্ষমতায় আসতে দেয়নি। ২০০৮ সালে ফের ক্ষমতায় আসি। বিএনপি ১০১৪ সালে নির্বাচনে আসেনি। আর ২০১৮ সালে প্রার্থীর মনোনয়ন বাণিজ্য করে নিজে থেকে সরে যায় তারা। তবে আওয়ামী লীগ ১৫ বছর সরকারে আছে। দেশের উন্নয়ন করেছে।


দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। ৮ হাজারের বেশি ডিজিটাল সেন্টার করেছি। প্রত্যেকের হাতে মোবাইল ফোন দিয়েছি। ব্রডব্যান্ড চালু করেছি। ওয়াইফাই এনে দিয়েছি। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। ৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার ঘরে বসে উপার্জন করতে পারে, সে ব্যবস্থা করে দিয়েছি। করোনায় আমি বসে থাকিনি অনলাইনে সভা করেছি।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৩৩ টি জেলা ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত হয়েছে। ৮ লাখ ৪১ হাজারেরও বেশি পরিবার ঘর পেয়েছে। আমরাই বয়স্ক ভাতার ব্যবস্থা করেছি। স্বামী পরিত্যক্তা ও বিধবা ভাতা দিচ্ছি। সারাদেশে বিনামূল্যে বই দেয়ার ব্যবস্থা করেছি। প্রাইমারি থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি দিচ্ছি।

অনেককে নর্দমা থেকে টেনে তোলা হয়েছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তাদের পয়সা বানানোর-ব্যবসা করার সুযোগ দিয়েছি, মিডিয়া চালানোর সুযোগ দিয়েছি। তারা টাকা ছড়ায়, তারা মনে করে টাকা দিয়েই মানুষ কেনা যায় না। টাকা তারা ছড়াক, তবে একটা স্মরণ করাতে চাই, টাকা দিয়ে মানুষ কেনা যায় না। এ মাটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের। এ মাটি খাঁটি। কাজেই একমাত্র নৌকা, এটাই মনে রাখতে হবে।

ফরিদপুর-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী শামীম হককে পরিচয় করানোর সময় শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫-এর পর আমরা বিদেশে রিফিউজি হিসেবে ছিলাম। ৮০ সালে আমি লন্ডনে যাই। শুধু তাই নয়, এরপর আমি যত বার গিয়েছি নেদারল্যান্ড যেতাম। সেখানে আমার ফুফাতো বোন শেলি জামান ছিল। বিভিন্ন দেশ ঘুরে ঘুরে আওয়ামী লীগ সংগঠন করেছি।

তিনি আরও বলেন, শেলি জামানকে সভাপতি ও শামীম হককে সাধারণ সম্পাদক করে নেদারল্যান্ড আওয়ামী লীগ গড়েছিলাম। সেখান থেকেই আমি জানি শামীম হক নিবেদিত প্রাণ, আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ একজন কর্মী।

‘‘বিদেশে থেকে দিনরাত পরিশ্রম করেও তিনি সেখানে সংগঠন গড়ে তোলেন। বাংলাদেশে এখন ফরিদপুরে কাজ করছে। তাকেই আমরা নোমিনেশন দিয়েছি। শামীম হক, আপনাদের কাছে তাকে তুলে দিয়ে গেলাম। নৌকায় ভোট দিয়ে তাদের জয়যুক্ত করবেন’’ যোগ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

এদিকে সাকিব আল হাসানকে ক্রিকেট রত্ন উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের একটা রত্ন আছে, ক্রিকেট রত্ন সাকিব আল হাসান। মাগুরা-১ আসনে তাকে আমরা মনোনয়ন দিয়েছি। এবারের ইলেকশনে তুমি শুধু ছক্কা মেরে দিও।


সাকিব বিষয়ে তিনি আরও বলেন, সে (সাকিব) বলেছে ভাষণ দিতে পারে না। আমি বলবো তোমাকে কোনো ভাষণ দিতে হবে না। শুধু বলবে তুমি ব্যাট হাতে ছক্কা মারতে পারো, আর বল হাতে উইকেট ফেলে দেবে। এতেই হবে।

এর আগে বিকেল সোয়া ৩টার দিকে সভামঞ্চে ওঠেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় নৌকার প্রার্থীরা এবং দলের নেতারা তাকে স্বাগত জানান।

এদিকে জনসভা উপলক্ষে শীতের আড়মোড়া ভেঙে সকাল থেকেই জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় আরও বাড়তে থাকে।

ফরিদপুর শহরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবশেষ গিয়েছিলেন ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ। ওইদিন বিকেলে তিনি এই রাজেন্দ্র কলেজ মাঠেই বক্তব্য দিয়েছিলেন।

তফসিল অনুযায়ী আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ হয় ১৮ ডিসেম্বর। সে দিন থেকেই প্রচারণায় নামেন সব প্রার্থী। ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রচারণা চালানো যাবে। ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি। যাচাই-বাছাই ও আপিল নিষ্পত্তি শেষে ইসি জানায়, ২৭ রাজনৈতিক দলের মোট ১ হাজার ৮৯৬ প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

প্রতীক বরাদ্দ হওয়ার আগের দিন আওয়ামী লীগ ও তার শরীক দলগুলো এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী নির্ধারণ শেষ হয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ শরিক ১৪ দলকে ৬টি, জাতীয় পার্টিকে ২৬ আসনে ছাড় দেয়। দলটি প্রার্থী দিয়েছে ২৬৩টি আসনে।

আরও খবর

🔝