gramerkagoj
শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ চৈত্র ১৪৩০
gramerkagoj

❒ নকল গ্যাসের ২০টি সিলিন্ডারসহ একজন আটক

সিলিন্ডারে রিপিলের সময় ওজনে দেয়া হচ্ছে কম, বড় দুর্ঘটনার শঙ্কা
প্রকাশ : রবিবার, ১২ নভেম্বর , ২০২৩, ০৫:৫৯:০০ পিএম , আপডেট : শুক্রবার, ২৯ মার্চ , ২০২৪, ০৩:০০:৩০ পিএম
কাগজ সংবাদ:
GK_2023-11-12_6550a939e1efe.jpg

এক কোম্পানির সিলিন্ডারে অন্য কোম্পানির গ্যাস ভরে বাজারজাত করে যশোরে ভোক্তা সাধারণ ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানির সাথে প্রতারণা করা একটি চক্রের সন্ধান পায় যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখা ডিবি। ৬ নভেম্বর ২০টি সিলিন্ডারসহ চক্রের একজন আটকও হয়। এরপর ব্যাপক অনুসন্ধানে মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে মামলা হলেও বিষয়টি চলে গেছে অগোচরে।
ব্যাপক অনুসন্ধানে তথ্য মিলেছে, এক কোম্পানির গ্যাস অন্য নামিদামি কোম্পানির খালি সিলিন্ডারে ভরা বা রিপিল করার সময় ১২ কেজি গ্যাসের স্থলে ৭ থেকে ৮ কেজি গ্যাস ভরা হচ্ছে। কোনো ক্রেতাই গ্যাস সিলিন্ডার তারা বাসা বা বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় অন্য পণ্যের মতো ওজন করে নেননা। আর এ সুযোগটাই কজে লাগাচ্ছে ওই প্রতারক চক্র। গ্রাহককে ১২ কেজির সিলিন্ডারে অন্তত চার কেজি গ্যাস ঠকানো হচ্ছে। এভাবে প্রতি সিলিন্ডারে অন্তত তিনশ’ টাকা ঠকিয়ে হাজার হাজার টাকার অবৈধ ব্যবসা করা হচ্ছে।
অপরদিকে, অবৈধভাবে এক সিলিন্ডারের সিল খুলে অন্য সিলিন্ডারে ভরার জন্য বড় ধরণের দুর্ঘটনার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। কারণ কোম্পানিগুলো বড় বড় ফ্যাক্টরিতে সাবধানতার সাথে যে প্রক্রিয়ায় সিলিন্ডারে গ্যাস রিপিল করে, এই প্রতারক চক্রের সেই পথ অনুসরণ সম্ভব না। তারা তাদের ছোটোখাটো গোডাউনে এই গ্যাস চুরির কাজটি করছে। যাতে রিপিলের কাজ প্রকৃত রিপিলের মতো হওয়া সম্ভব না। আর এতে গ্রাহকদের বাসা বা বাড়িতে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। ফলে এসব রিপিল করা গ্যাসের গ্রাহক একদিকে ওজনে কম পেয়ে প্রতারণা বা আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন, অন্যদিকে তাদের বাড়িটি আর নিরাপদ থাকছে না। যে কোনো সময় ঘটে যেতে পারে বড় ধরণের বিপর্যয়।
এসব বিষয় চিন্তা করেই যশোরে বসুন্ধরা গ্যাস কোম্পানির পক্ষে হাতেনাতে প্রতারক চক্রকে ধরতে অনেক দিন ধরে চেষ্টা চালায়। সে চেষ্টায় গত ৬ নভেম্বর ২০টি রিপিল করা গ্যাস সিলিন্ডারসহ রবিউল ইসলাম নামে একজনকে ডিবির সহায়তায় আটক করে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানি বসুন্ধরা যশোরের পরিবেশক এস এম নূর উদ্দীন মামলা করেন। ঘটনাটি নিয়ে যশোরের গোটা গ্যাস ব্যবসায়ী সেক্টরে তুমুল হৈচৈ শুরু হয়েছে।
ওই মামলায় বলা হয়েছে, রবিউলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, এই কর্মকান্ডের মূল হোতা তিনিটি কোম্পানির পরিবেশক হাদিউজ্জামান জিতু। যে নিজের কোম্পানির সাইনবোর্ডের আড়ালে বিভিন্ন স্থান থেকে বসুন্ধরা কোম্পানির খালি সিলিন্ডার সংগ্রহ করে। পরে তার গোডাউনে নিজের কোম্পানির গ্যাস ওজনে কম দিয়ে রিপিল করে বাজারে ছাড়ে। যা করে সে গ্রাহক ঠকানোর পাশাপাশি বিপদের ঝুঁকিতে ফেলছে গ্রাহকসাধারণকে।
এদিকে, গোয়েন্দা সংস্থা তথ্য পেয়েছে, বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের সিলিন্ডারে অন্য কোম্পানির গ্যাস ভরে তা বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে একটি প্রতারক চক্র। আর তা সরবরাহের জন্য বিভিন্ন এলাকায় চক্রটির ডেরাও রয়েছে। ওই সব ডেরা থেকে বিক্রি করা হয়। ৬ নভেম্বর যশোরের খড়কী কবরস্থান এলাকা থেকে বসুন্ধরা লেখা ২০টি সিলিন্ডারসহ রাজারহাট এলাকার রবিউল ইসলাম নামে একজনকে আটক করে পুলিশ। একটি চক্রের নকল বসুন্ধরা গ্যাস পরিবহন করছিল সে। বসুন্ধরা গ্যাসের যশোরের পরিবেশক এসএম নুর উদ্দিনের তথ্যে এই অভিযান চালিয়ে সত্যতাও পায় ডিবি।
ডিবির অভিযানিক অফিসার এসআই সোলাইমান আক্কাস জানিয়েছেন, চক্রটি বসুন্ধরা সিলিন্ডার সংগ্রহ করে কিংবা নকল করে তাতে দুবাই বাংলা গ্যাস ভরে বাজারজাত করে আসছিল। বসুন্ধরা গ্যাসের বাজার মূল্য দুবাই বাংলা থেকে বেশি হওয়ায় চক্রটি অনৈতিক কর্মকান্ড করে আসছিল। ৬ নভেম্বর হাতেনাতে ২০টি সিলিন্ডার আটক করা হয়েছে। এছাড়া আটক রবিউল ইসলামসহ চক্রের লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন বসুন্ধরার ডিলার এসএম নুর উদ্দিন।
এদিকে অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, এর আগে বসুন্ধরা লেখা কিছু এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার ভর্তি একটি পিকআপ ভ্যান আটক করে পুলিশ। পরে পাশের একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে বসুন্ধরার নাম দিয়ে তৈরি করা নকল শতাধিক এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার জব্ধ করা হয়।
ওই সময় আরো কয়েকটি ব্রাান্ডের এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় পুলিশের উপস্থিতি আঁচ করে চক্রের সদস্যরাসহ পিকআপ ভ্যান চালক পালিয়ে যায়। চক্রের সদস্যদের ধরতে অভিযান চলছে।

আরও খবর

🔝