gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ৫ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাতে কেশবপুরে জড়ো হন ২০ হাজার উপকারভোগী
প্রকাশ : মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর , ২০২৩, ১০:০৯:০০ পিএম , আপডেট : মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল , ২০২৪, ১০:৪৩:০৫ পিএম
কামরুজ্জামান রাজু, কেশবপুর (যশোর):
GK_2023-10-17_652eb22f5ba0a.jpg

দুপুর আড়াইটা। বৃদ্ধ করিম গাজী (৭৫) স্ত্রী সুখজানের (৭০) হাত ধরে আসেন কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে। আসেন উপজেলার হিজলডাঙ্গা গ্রাম থেকে। দু’জনই সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর উপকারভোগী (বয়স্ক ভাতা কার্ডধারী)। তখন মাঠের তিনভাগ জুড়ে লোকে লোকারণ্য। হাজার হাজার নারী পুরুষসহ স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা বাধভাঙা জোয়ারের মতো আসছে মাঠে। বিকেল তিনটায় উপজেলার ভালুকঘর গ্রাম থেকে আসেন নূর আলী (৭০)। তাদের মুখে একই রকম কথা শোনা যায় ‘শেখ হাসিনাকে (প্রধানমন্ত্রী) সালাম (ধন্যবাদ) দিতে এসেছি।’ তিনি (প্রধানমন্ত্রী) আমাদের কার্ড করে টাকা দিচ্ছেন, তাই মনের টানে কেশবপুর কলেজ মাঠে আসছি।’ বিকেল ৩টার মধ্যেই কেশবপুর কলেজ মাঠ উপকারভোগীদের উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এ সময় কলেজে প্রবেশের দু’পথে হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমে যায়। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর উপকারভোগী এসব জনসাধারণ এদিন কলেজ মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাতে আসেন। হাজারও উপকারভোগীর উপস্থিতি মিলনমেলায় পরিণত হয়।
মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কেশবপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর উপকারভোগীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আবেগ আপ্লুত হয়ে উপজেলার আলতাপোল গ্রামের ভূমিহীন হজরত আলী গাজী বলেন,‘আমি একজন অসহায় প্রতিবন্ধী। থাকার জায়গা ছিল না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই শতক জমি ও পাকা ঘর করে দিয়েছেন। আমি বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে সেখানে সুখে শান্তিতে আছি।’
পাঁচারই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতুল এলিন মুন জানায়,‘প্রধানমন্ত্রী প্রাণি স¤পদ অফিসের মাধ্যমে গবাদি পশু দিয়ে তাদেরকে দুধ খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।’
সুফলাকাটি ইউনিয়নের গৃধরনগর গ্রামের গৃহিণী ভক্তিরানী রাহা বলেন, ‘আমাদের গ্রামের মানুষদেরকে স্বাস্থ্যসেবার জন্য ২০ কিলোমিটার দূরে কেশবপুর হাসপাতালে আসতে হতো। প্রধানমন্ত্রী আমাদের এলাকায় একটি কমিউনিটি ক্লিনিক করে দেয়ায় আমার পরিবারসহ এলাকার মানুষ বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারছি। এখন আর আমাদের ডাক্তার দেখাতে যশোর, খুলনায় যাওয়া লাগে না।’
মজিদপুর গ্রামের প্রতিবন্ধী আব্দুস সবুর বলেন,‘আমার দু’টি পা নেই। চলাফেরা করতে পারি না। প্রধানমন্ত্রী সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে একটি প্রতিবন্ধী কার্ড করে দিয়েছেন। মাস গেলেই ভাতা পাচ্ছি। আগামীতে চাইবো শেখ হাসিনা যেন আবার প্রধানমন্ত্রী হোক।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এমএম আরাফাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদার। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইন, কেশবপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কাজী রফিকুল ইসলাম, পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম রুহুল আমীন। উপকারভোগীদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম তৌহিদুজ্জামান, ভূমিহীন হজরত আলী গাজী, গৃহিণী ভক্তিরানী রাহা, স্কুল ছাত্রী জান্নাতুল এলিন মুন, মৎস্যজীবী মাধব বর্মণ, শিক্ষক হজরত আলী, প্রতিবন্ধী আব্দুস সবুর প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে গিয়ে এসব উপকারভোগী আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। অনুষ্ঠানে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় ২০ হাজার উপকারভোগী মানুষ হাজির হন।
সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, নারী ও শিশুদের উন্নয়ন এবং বিভিন্ন পেশাজীবীর দক্ষতা ও সামর্থ্য বৃদ্ধিতে বর্তমান সরকার গৃহীত নানাবিধ প্রকল্পের মাধ্যমে কেশবপুরে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬৫৪ জন উপকারভোগী ব্যক্তি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। এসব উপকারভোগীদের নিয়ে এমন ব্যতিক্রম অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

 

আরও খবর

🔝