শিরোনাম |
দু’দিন বাদেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। প্রতি বছর এই উৎসবকে ঘিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে শুরু হয় নানা ধরনের কর্মচাঞ্চল্য বা ব্যস্ততা। কিন্তু এ বছর দুর্গাপূজায় শহরের মার্কেটগুলোতে উত্তাপ নেই কেনাকাটায়। অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কায় সঞ্চয় ভাংছেন না অনেকেই। এ কারণে কেনাকাটার এবার ভাটা পড়েছে। এমন তথ্য জানিয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন,অন্য বছর পূজায় ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ টাকা উত্তোলন হয় এবার তার পরিমাণ খুবই কম।
যশোরের বড় হাটচান্নি কাপড়ের মার্কেটে কথা নারায়ণ ভৌমিক নামে এক পাট ব্যবসায়ীর সাথে। তার সাথে স্ত্রী সুগন্ধা রানীও ছিলেন। মণিরামপুর থেকে আসেন পূজার কেনাকাটা করতে। তিনি বলেন, প্রতিবছর পরিবারের জন্য যে বাজেটের মধ্যে কেনাকাটা করেন এবার তার ৩০ শতাংশ বাজেটে কেনাকাটা সারছেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন,‘সামনে নির্বাচন, ডলারের দাম বেড়েই চলেছে, অর্থনৈতিক মন্দা তো চলছে বেশ আগে থেকেই। তাছাড়া লাগামহীন দ্রব্যমূল্যতো মানুষকে স্থির থাকতে দিচ্ছে না। এসব কারণে খরচ কমাতে হচ্ছে।’
একই কথা বলেন কলেজ শিক্ষক রমা রায়। তিনি বলেন,যশোরের বেজপাড়ায় তার বসবাস নড়াইলে শিক্ষকতা করেন। কিছু সঞ্চয় আছে তার, যা থেকে প্রতিবছর পূজা ও চিকিৎসা বাবদ খরচ করেন। তবে এ বছর পূজায় তেমন খরচ করতে সাহস পাচ্ছেন না বলে মন্তব্য তার। তিনিও অর্থনৈতিক মন্দার কথা বলেন।
সোমবার শহরের কালেক্টরেট মার্কেট, বড় বাজার, এইচএমএম রোড, কাপুড়িয়া পট্টি, চৌরাস্তা ঘুরে দেখা গেছে শারদীয় উৎসবে অন্য বছরের তুলনায় কেনাকাটা করতে আসা মানুষের সংখ্যা অনেক কম। দোকানিরা বলছেন, এবার কেনাকাটার মূল সময়ে আবহাওয়া বেশ ভালো। তারপরও জমেনি পূজার বাজার। এ কারণে তারা হতাশ। তারা বলছেন, রোজার ঈদ ও দুর্গাপূজায় যে কেনাকাটা হয় তাতে ব্যবসায়ীরা বেশ খোশ মেজাজেই অন্য সময় পার করেন। কিন্তু এবার অবস্থা খারাপ বলে দাবি তাদের।
বড় বাজারের প্রীতি সু’র স্বত্বাধিকারী সুজন পাল বলেন,‘প্রতিবছর পূজা বেশ ভালো বেচাকেনা হয়। কিন্তু এবছর প্রতিদিনের স্বাভাবিক কেনাবেচার মতোই চলছে। কোনো ভিড় নেই। যা দু’ একজন আসছেন দাম শুনে তারা চলে যাচ্ছেন।’
আটপৌরের (শাড়ির দোকান) ম্যানেজার অভিজিৎ ঘোষ বলেন, গত কয়েকদিন ধরে কেনাবেচা তেমন ভালো না। আজ (সোমবার) থেকে একটু কেনাকাটা হচ্ছে। তবে অন্যান্য পূজার বাজারের চেয়ে এবার একটু কম।
অগ্রণী ব্যাংকের ঝুমঝুমপুর শাখার ব্যবস্থাপক সঞ্জয় দাস বলেন, প্রতি বছর দুর্গা পূজা আসলেই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তার শাখা থেকে প্রচুর অর্থ উত্তোলন করেন। কিন্তু এ বছর উত্তোলনের হার একেবারেই কম। কারণ হিসেবে কিছু গ্রাহক তাকে বলেছেন পূজায় বেশি টাকা খরচ করে সঞ্চয় নষ্ট করতে চান না।