gramerkagoj
শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৭ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
দেশকে ভূমিকম্প সহনশীল করতে ৫০ বছর লাগবে : প্রতিমন্ত্রী
প্রকাশ : শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর , ২০২৩, ০৬:২১:০০ পিএম , আপডেট : শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪, ০২:২৫:০২ পিএম
কাগজ ডেস্ক:
GK_2023-10-13_65292861c8f0d.jpg

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশকে ভূমিকম্প সহনীয় করতে ৫০ বছর সময় লাগবে। শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) বেলা ১১টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশকে ভূমিকম্প সহনীয় করতে জাপান সরকার আর্থিক এবং কারিগরি সহায়তার জন্য প্রস্তুত আছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাপানের রাষ্ট্রদূত আমার সঙ্গে কয়েক দফা কথা বলেছেন। আমাদের দেশকে ভূমিকম্প সহনশীল করতে ৫০ বছর সময় লাগবে। কারণ জাপানের মতো রাষ্ট্রকে ভূমিকম্প সহনশীল করতে ৩০ বছর সময় লেগেছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন উন্নত গাণিতিক মডেল ব্যবহার করে ঘূর্ণিঝড় পূর্বাভাস ও সতর্কতা বার্তা প্রদান করা হচ্ছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে বর্তমানে গাণিতিক আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল ‘ডব্লিউআরএফ’ ব্যবহার করে ৭-১০ দিনের পূর্বাভাস অনেক নির্ভুলভাবে পাওয়া সম্ভব হচ্ছে।
বজ্রপাতে প্রাণহানি কমানোর লক্ষ্যে আগাম সতর্কবার্তা দিতে দেশের আটটি স্থানে পরীক্ষামূলকভাবে বজ্রপাত চিহ্নিতকরণ যন্ত্র বা লাইটনিং ডিটেকটিভ সেন্সর বসানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, বজ্রপাতপ্রবণ ১৫টি জেলার ১৩৫ উপজেলায় ৩৩৫টি বজ্র নিরোধক দণ্ড স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া কালবৈশাখী ও টর্নেডোর পূর্বাভাস বিষয়ে বর্তমান সরকার কার্যক্রম শুরু করেছে।
দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আরও সময়োপযোগী ও কার্যকরী সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে বলে জানান ডা. মো. এনামুর রহমান।
তিনি বলেন, আগাম সতর্কবার্তা প্রচারে দুর্যোগের আগে রেডিও, টেলিভিশন ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণার পাশাপাশি টোল ফ্রি ১০৯০ নম্বর চালু করা হয়েছে। এছাড়া বর্তমানে সারাদেশে প্রায় ৩২টি কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা প্রচার করা হয়ে থাকে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আগাম সতর্কবার্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, বন্যা, ঝড়, বৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সতর্কবার্তা প্রস্তুতি ও প্রচারে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। সম্প্রতি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তিনদিনে আকস্মিক বন্যার পূর্বাভাস প্রচলন হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর বর্তমানে স্থানীয় পর্যায়ে বন্যার আগাম সতর্কীকরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও প্রচারের জন্য কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও জামালপুর জেলায় একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, দুর্যোগঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় অবকাঠামোগত উন্নয়নের অংশ হিসেবে ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত এক লাখ ৪২ হাজার ৯২৯টি দুর্যোগ সহনীয় ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দকৃত আরও ২৪ হাজার ৬১৩টি দুর্যোগ সহনীয় ভবন নির্মাণের কাজ চলমান। অপরদিকে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসে ঝুঁকিগ্রস্ত মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার জন্য উপকূলীয় অঞ্চলে ৩২৭টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।
বন্যাপ্রবণ ও নদীভাঙন এলাকায় ২৩০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে এবং ৪২৩টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলমান বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
তিনি জানান, উপকূলীয় ও বন্যা উপদ্রুত এলাকার ১৫৫টি উপজেলায় ৫৫০টি বহুমুখী মুজিব কিল্লা নির্মাণ এবং বিদ্যমান ১৮৯টি মুজিব কিল্লার সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান।
প্রতিমন্ত্রী জানান, গ্রামীণ রাস্তায় এ পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৭৮৬টি সেতু, কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া গ্রামীণ রাস্তা টেকসই করতে ৬৭৮৮.৭৮ কিলোমিটার রাস্তা এইচবিবিকরণ করা হয়েছে।
এসময় তিনি একটি ঘটনার কথা স্মরণ করে বলেন, আমি একবার প্রধানমন্ত্রীকে বলে ইংল্যান্ড গিয়েছিলাম। হঠাৎ সকালে উঠে দেখি দুটা মিসকল। প্রধানমন্ত্রীকে কলব্যাক করার পর বললেন, তুমি কোথায়? আমি বললাম ইংল্যান্ডে, আপনাকে তো বলে আসছি। এরপর তিনি বললেন, তোমাকে এখনই বাংলাদেশে চলে আসতে হবে। বললাম কেন! প্রধানমন্ত্রী বললেন, বাংলাদেশের আকাশ কালো হয়ে গেছে। কালো মেঘ দেখা দিয়েছে, দুর্যোগ আসতে পারে। তাহলে দেখেন কতটা সেনসেটিভ প্রধানমন্ত্রী। যে আকাশে মেঘ দেখলেই তিনি ত্রাণমন্ত্রীর কথা স্মরণ করেন। এজন্য তার শাসনামলে কোনো দুর্যোগে একটাও অপমৃত্যু হয়নি।

আরও খবর

🔝