gramerkagoj
শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ৬ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষায় কর্ণফুলীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের বিকল্প নেই
প্রকাশ : বুধবার, ৯ জুন , ২০২১, ০৬:৪৮:১৯ পিএম
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি::
1623244815.jpg
চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষায় কর্ণফুলী নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের কোন বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে বন্দরনগরীর উন্নয়ন প্রকল্পসমূহ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। এসব প্রকল্প যথাসময়ে শেষ করতে না পারলে ব্যয় বাড়ার পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে ব্যবসায়ীদের।চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম মঙ্গলবার চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির উদ্যোগে প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে অনুষ্ঠিত এক ওয়েবিনারে এ কথা বলেন।ওয়েবিনারে চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ফরেইন ইনভেস্টরর্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির সভাপতি রূপালী হক চৌধুরী, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মো. আলমগীর কবির, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের অ্যাক্সিকিউটিভ কমিটি ও বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সেলিম উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।প্রস্তাবিত বাজেটকে দূরদর্শী উল্লেখ করে চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার জাতীয় লক্ষ্যের সাথে সংগতিপূর্ণ। কর্পোরেট করহার হ্রাস করা, বিভিন্ন সেক্টরে কর অব্যাহতি ও কর অবকাশ প্রদান সরকারের বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি সহায়ক নির্দেশনা হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বেশি না হলেও সরকারি ব্যয়ের কারণে জিডিপি বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘোষিত বাজেটে কর্পোরেট কর হ্রাস এবং অনেক খাতে দেশিয় শিল্পের জন্য কর অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। মহামারির কারণে সরকার ঘোষিত প্যাকেজে বৃহৎ শিল্প মালিকরা উপকৃত হলেও বিভিন্ন ব্যাংকের কারণে এসএমই খাত সেভাবে উপকৃত হয়নি। বর্তমান করদাতাদের উপর অতিরিক্ত চাপ বৃদ্ধি না করে পরিধি বৃদ্ধি করে করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি করা, পলিসি ও বাস্তবায়ন বিভাগ আলাদা করা এবং বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় করহার আরও যৌক্তিক করার অনুরোধ জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।ফরেইন ইনভেস্টরর্স চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি সভাপতি রূপালী হক চৌধুরী বলেন, এ বাজেট দেশিয় শিল্পবান্ধব। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগ তেমন বৃদ্ধি পায়নি। সরকার যদিও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রচুর কাজ করছে এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে তবে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য আইনগত ও নীতিগত দিকে আরও অনেক উন্নয়ন এবং সমন্বয় অপরিহার্য। যেমন, বেজার অধীনে প্রথমে উল্লেখ না করে পরবর্তীতে ভূমি হস্তান্তরের উপর ১৫% ভ্যাট নির্ধারণ অযৌক্তিক। টেলিযোগাযোগ খাতে ৫৬% কর নেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তা হ্রাস করার অনুরোধ জানান তিনি।বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, তৈরি পোশাক খাতে ১% প্রণোদনা রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। দক্ষ জনবলের অভাবপূরণে এ খাতে প্রস্তাবিত প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও জোরদার করা প্রয়োজন। নীতিমালাসমূহ ৫-১০ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হলে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। নন-কটন পণ্য তৈরিতে আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে এবং জিএসপি প্লাস সুবিধা গ্রহণে দ্বি-স্তরভিত্তিক অর্থাৎ ফ্রেবিক্সসহ মূল্য সংযোজন বৃদ্ধি করতে হবে। প্রদেয় প্রণোদনার উপর ১০% কর প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেন বিজিএমইএ সভাপতি।বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফেকচারার্স এসোসিয়েশন সভাপতি মো. আলমগীর কবির বলেন, দেশে ৩৭টি সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এ খাত অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে রাজস্ব আয় ও জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তিনি অগ্রিম করকে চূড়ান্ত দায় হিসেবে বিবেচনা না করা, ক্লিংকার আমদানিতে শুল্ক হ্রাস এবং ডাবল ট্যাক্সেশন প্রত্যাহার করার অনুরোধ জানান।চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন. করোনা মহামারির কারণে দেশের পুঁজিবাজার বিপর্যস্ত। প্রথম দিকে প্রায় ৬০ দিন পুঁজিবাজার বন্ধ ছিল। বর্তমানে ব্রোকারেজ হাউজের পরিচালনা ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্পোরেট কর হ্রাস করা হলেও দু’ধরণের কোম্পারির কর পার্থক্য আরও যৌক্তিক হলে শেয়ার বাজারের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাবে। তিনি রাষ্ট্রীয় লাভজনক প্রতিষ্ঠানকে পুঁজিবাজারে আনার পরামর্শ দেন। সিএসইর অধীনে একটি এসএমই প্রতিষ্ঠান ৭.৫ কোটি মূলধন সংগ্রহের লক্ষ্যে তালিকাভূক্ত হয়েছে উল্লেখ করে পুঁজিবাজারের লভ্যাংশ করমুক্ত করা এবং ব্যাংক ব্যবস্থার উপর নির্ভরতা হ্রাস করে শেয়ার মার্কেটে অন্তর্ভূক্ত কোম্পারির সংখ্যা বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন।ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ কমিটি ও বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশন চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. সেলিম উদ্দিন বলেন, বড় বাজেটে বড় ঘাটতি থাকবে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশি উৎস থেকে যথেষ্ট পরিমাণ ঋণ পাওয়া যাচ্ছে। কর অব্যাহতির কারণে রাজস্ব আহরণ কমে গেলে এবং সরকারের ব্যয় বেশি হলে অভ্যন্তরীণ ঋণের উপর চাপ পড়তে পারে।তিনি বলেন, মহিলা উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা এবং সিএমএসএমই সেক্টরের উৎপাদনভিত্তিক উদ্যোক্তাদের টার্ণওভার ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত এবং সেবা ও ট্রেডভিত্তিক উদ্যোক্তাদের টার্ণওভার ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত রাখা। এছাড়া ব্যক্তিগত কর আয়সীমা ৩ লাখ টাকার পরবর্তী ধাপগুলো পুনর্বিন্যাস এবং ক্যাশ রেজিস্ট্রারের উপর ৫% অগ্রিম কর প্রত্যাহারের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের ক্যাশ রেজিস্ট্রার ব্যবহারে অনুপ্রেরণা প্রদানের অনুরোধ জানান তিনি।

আরও খবর

🔝