gramerkagoj
বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ৫ বৈশাখ ১৪৩১
gramerkagoj
পরিজনের কাছে ফিরতে এ যেন এক যুদ্ধযাত্রা!
প্রকাশ : রবিবার, ৯ মে , ২০২১, ০৭:৩৭:৫২ পিএম
মাদারীপুর প্রতিনিধি: :
1620567974.jpg
ঠেলাধাক্কা আর গাদাগাদি করে দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে বাড়ি ফিরছে দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ। ঈদকে সামনে রেখে পরিবার-পরিজনের কাছে ফিরতে এ যেন এক যুদ্ধযাত্রা!বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে জরুরি যানবাহন পারাপারের জন্য রোববার (৯ মে) সকাল থেকে তিনটি ফেরি চলাচল করছে।জরুরি যানবাহনের এই ফেরিতেই যানবাহনের জায়গা দখলে নিয়েছে হাজারো যাত্রী।ঘাট সূত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার ফেরিঘাটে সীমিত আকারে তিনটি ফেরি জরুরিভিত্তিতে আসা যানবাহন ও যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে। রোববার সকাল ৮টায় কুঞ্জলতা ও সাড়ে ৮টায় কুমিল্লা নামে দুটি ছোট ফেরি শিমুলিয়ার উদ্দেশে ছাড়া হয়। আর শিমুলিয়া থেকেও সকাল ৮টায় ফরিদপুর নামে একটি ছোট ফেরি সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলাবাজার ঘাটে এসে পৌঁছায়। এতে কমপক্ষে দেড় হাজার যাত্রী ছিল।ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, ফেরি চলাচল বন্ধ। তবে জরুরি প্রয়োজনে আসা অ্যাম্বুলেন্স ও লাশবাহী গাড়ি পারাপারের জন্য তিনটি ফেরি চলাচল করছে। তবে ঘাটে ফেরি যানবাহনের জন্য প্রস্তুত করলেই যাত্রীরা ঝাঁকে ঝাঁকে ফেরিতে উঠে যাচ্ছে। ফলে যাত্রীদের নিয়েই ফেরি তিনটি চলাচল করছে।আবুল কালাম নামের খুলনার এক যাত্রী বলেন, ঢাকা থেকে সহজেই গাড়িতে করে বিভিন্ন স্থানে যাওয়া যাচ্ছে। ঘাটে আসা যাচ্ছে। ঘাটে ফেরি বন্ধ করার ফলে লোক সমাগম আরও বাড়ছে। করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার যে ব্যবস্থা নিচ্ছে তাতে করে তো উল্টো হবে। হাজার হাজার যাত্রী ঘাটে গায়ে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে। ফেরিতে গাদাগাদি করে দুর্ভোগ মাথা নিয়ে বাড়ি ফিরছে। সকল নৌযান চালু রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পার করতে পারতো।বাচ্চু মুন্সী নামে টেকেরহাটের এক যাত্রী বলেন, বাড়িতে মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। ঈদের নতুন জামা কাপড়ের জন্য বাচ্চা পথচেয়ে আছে। প্রায় সারা বছরই তো বাড়ির বাইরে থাকি। ঈদের সময় পরিবারের কাছে যাবো না? ঈদের সময় ঢাকায় থাইকা কি করমু?সরেজমিনে রোববার সকালে শিবচরের বাংলাবাজার ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ২৫টি অ্যাম্বুলেন্স ও শতাধিক মোটরসাইকেল, দুই শতাধিক যাত্রী নিয়ে কুঞ্জলতা ও কুমিল্লা নামে দুটি ফেরি বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। অপরদিকে, সকাল সাড়ে ৯টায় ফরিদপুর নামে একটি ছোট ফেরি শিমুলিয়া থেকে ছেড়ে বাংলাবাজার ঘাটে আসে। এই ফেরিতে অ্যাম্বুলেন্স আর দেড় সহস্রাধিক যাত্রী ছিল।বিআইডব্লিউটিসি ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে সাধারণত ১৬টি ফেরি চলাচল করে। চলমান করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে লকডাউন চলায় ১৪ এপ্রিল থেকে সীমিত করা হয় ফেরি চলাচল। লকডাউনের শুরুতে দিনের বেলায় ২-৩টি ফেরি পরে ৬ থেকে সাতটি ফেরি ছাড়া হলেও গত শুক্রবার থেকে যাত্রী ও জরুরি প্রয়োজনে আসা যানবাহনের চাপ বেশি থাকা প্রায় সবকয়টি ফেরি চলাচল করে এ নৌপথে। এসব ফেরিতে জরুরি প্রয়োজনে আসা যাত্রী, অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী ট্রাক, কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপারের কথা থাকলেও হাজার হাজার সাধারণ যাত্রী পারাপার হতে দেখা যায় ফেরিতে। এ কারণে বিআইডব্লিউটিসি’র পক্ষ থেকে গত শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু ঢাকা থেকে আসা ঘরমুখো যাত্রীদের ভিড় তীব্র হওয়ায় শুধু যাত্রী নিয়ে ফেরি ছাড়তে বাধ্য হয় ঘাট কর্তৃপক্ষ। যাত্রী আর জরুরি প্রয়োজনে আসা গাড়ি পারাপারের কারণে উভয় ঘাটেই আটকা পড়েছে দেড় সহস্রাধিক যানবাহন। এরমধ্যে পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।এদিকে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও বিআইডব্লিউটিসি’র বাংলাবাজার ঘাটের ব্যবস্থাপক সালাহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।  বাংলাবাজার ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) আশিকুর রহমান জানান, সকাল থেকে ২৫টির মতো অ্যাম্বুলেন্স দুটি ফেরিতে তোলা হয়। এছাড়াও রোগীবাহী কয়েকটি গাড়িও ফেরিতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ঘাটে দিনে বেলায় ফেরি না চলায় বাংলাবাজার ঘাটের টার্মিনালে ৫ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে।

আরও খবর

🔝