
জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, ছাত্ররাজনীতি বন্ধ নয় বরং রাজনীতির নামে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে যে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চলছে সেগুলোকেই বন্ধ করতে হবে।
একই সাথে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে প্রতিবাদের সব পথও বন্ধ হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন তিনি। ছাত্র রাজনীতি বন্ধের নামে দেশের অব্যাহত অন্যায়, জুলুম আর দু:শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আর কথা বলার পথ বন্ধ করা যাবে না।
মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমার মিলনায়তনে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট আয়োজিত ‘ছাত্র রাজনীতি নয়, সন্ত্রাস বন্ধ করুন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।
সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন আর সরকারের সমালোচনা করে আর আনু মুহাম্মদ বলেন, সরকার তার ক্ষমতাকে স্থায়ী করার জন্যই ছাত্ররাজনীতিকে ইচছামতো ব্যবহার করছে। সরকারও ভালো করেই জানে যে, সরকারের কাঠামো ঠিক রাখতেই প্রতিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নামের এই সন্ত্রাসী বাহিনী দরকার।
বুয়েটের ছাত্র আবরার হত্যার পর দেশবাসী জানতে পেরেছে ছাত্র রাজনীতির নামে আসলে সরকার তার গদি রক্ষার জন্যই এই ছাত্রলীগকে ব্যবহার করছে। তবে এই ধারাবাহিকতা আজ নতুন নয়। স্বাধীনতার পরের যে স্বর্নোজ্জ্বল ইতিহাসের কথা আমরা হরহামেশাই শুনে আসছে সেই সময়েও ছাত্র রাজনীতি এই একই পথে চলেছে। তার পরের সরকারের আমলেও এর কোনো ব্যতিক্রম আমরা দেখিনি।
আনু মুহাম্মদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনও ছাত্রলীগকে তাদের অন্যায় কাজের লাইসেন্স নিয়েছে। হলগুলো চলে ছাত্র লীগের ইচ্ছার উপরে নির্ভর করেই। সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র লীগ একটি ভয়ের রাজত্ব কায়েম কায়েম করেছে। ছাত্রলীগ কিছু শিক্ষার্থীকে তাদের রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে ব্যবহার করছে।
তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যায়রে ভিসির টাকা ভাগাভাগির খবর প্রকাশ না হলে আমরা অনেক কিছুই জানতে পারতাম না। অনেক ভিসিই ছাত্রলীগের সাথে সমঝোতা করে চলছেন। সরকারও আনুগত্যের বিচারে ছাত্র লীগের সুপারিশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভিসি নিয়োগ দিয়ে থাকে।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভপতি আল কাদেরী জয়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বুয়েটের অধ্যাপক হাসিবুর রহমান, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সিত্তুল মুনা হাসান, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সায়েমা খাতুন প্রমূখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স।