
সিদ্ধান্তহীনতার কারণে জ্বালানি খাত দুর্যোগে রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে পেট্রোসেন্টারে জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালে যেভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছেন, আমরা পঁয়তাল্লিশ বছর পরে এসেও তেমন সাহস দেখাতে পারছি না কেন? আমাদের সেইভাবে সাহসী লিডারশিপ গড়ে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে লিডারশিপ মানে ঝুঁকি থাকবেই।
কর্মকর্তাদের যথাযথ ট্রেনিং প্রসঙ্গে নসরুল হামিদ বলেন, আমি প্রতিদিন যে ফাইলগুলো স্বাক্ষর করি তার ৬০ শতাংশই বিদেশ ভ্রমণের। আমি যখন দেখি সাত-দশ দিনের ট্রেনিং, তখন ধরেই নেই কোনো কাজে আসবে না। আমি সবসময় বলি যারা বিদেশ সফরে যাচ্ছেন তারা দেশে ফিরে প্রেজেন্টেশন দেবেন। কিন্তু সেটা কেউ করছেন না।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৩ মাস, ৬ মাস মেয়াদের ট্রেনিংয়ের মডেল করতে হবে, যাতে দক্ষ জনবল তৈরি করা সম্ভব হয়। বিদ্যুৎ বিভাগ বছরে ২৫শ’ ট্রেনিং দিচ্ছে। জ্বালানি বিভাগকেও সেভাবে প্ল্যান করার পরামর্শ দেন প্রতিমন্ত্রী।
জ্বালানি বিভাগের সচিব আবু হেনা রহমাতুল মুনিম এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ট্রেনিং মানে বিদেশ ভ্রমণ, ঘোরাফেরা হয়ে গেছে। প্রয়োজনে বিদেশ থেকে ট্রেইনার আনা হবে। এই ভ্রমণ প্রবণতা বন্ধ করা হবে।
বাপেক্সের কূপ কয়েকগুণ বেশি দামে রাশিয়ান রাষ্ট্রীয় কোম্পানি গাজপ্রমকে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে সচিব বলেন, অনেকে বলে শুধু বাপেক্সকে দিয়ে সম্ভব না, বিদেশি কোম্পানিকে দিতে হবে। তাই দেওয়া হয়। বিদেশিরা একটু বেশি টাকা নেবেই। পাই পাই করে খরচ করব, নাকি এগিয়ে যেতে হবে?
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, শিগগিরই সাগরে অবস্থিত ব্লকে (এসএস৪) অনুসন্ধান কূপ খনন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে আরও তিনটি ব্লকে (এসএস-৪, এসএস-৯ ও এসএস-১১) অনুসন্ধান কূপ খনন করা হবে।
বিপিসির চেয়ারম্যান সামছুর রহমান বলেন, বিদ্যুতের উন্নয়নের কারণে ডিজেলের চাহিদা কমে যাচ্ছে। এক সময় সেচে অনেক ডিজেল লাগতো সরবরাহে হিমশিম খেতে হতো। এখন সেই সেচ বিদ্যুতের মাধ্যমে আসছে।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার।
১৯৭৫ সালে ৯ আগস্ট ৫টি গ্যাস ক্ষেত্র (তিতাস, বাখরাবাদ, হবিগঞ্জ, রশিদপুর ও কৈলাশটিলা) নামমাত্র মূলে বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল মাত্র ৪.৫ মিলিয়ন পাউন্ড। এ কারণে ২০১০ সাল থেকে দিনটি জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।