
নড়াইলের ভওয়াখালী এলাকা থেকে ১২ বোতল ফেন্সিডিল, ১০০ গ্রাম গাঁজা ও মাদক বিক্রয়ের ১৯ লাখ টাকাসহ চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী উজ্জল রায়ের স্ত্রী দিপালী রায় (৩০) আটক হয়েছে। ভ্রাম্যমান আদালত সোমবার রাত সাড়ে দশটার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্য্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আল আমিন।
তিনি বলেন, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তর নড়াইলের সহযোগিতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি পৌরসভাধীন ভওয়াখালী গ্রামে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী উজ্জল রায়ের বাড়িতে মাদক ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে। এ সময় তার বাড়িতে অভিযানকালে অপ্রত্যাশিত ভাবে মাদক বিক্রয়ের ২০ লাখ টাকাসহ ১২ বোতল ফেন্সিডিল, ১০০ গ্রাম গাঁজা পাওয়া যায়। অভিযানকালে উজ্জল রায় বাড়িতে না থাকায় তার স্ত্রী দিপালী রায় জব্দকৃত টাকা নিজেদের দাবি করলে ঘটনার সন্দেহে তাকে আটক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মাদক কারবারী উজ্জল রায় সাংবাদিকতার আড়ালে দীর্ঘদিন মাদক কারবার করে আসছে। তার বিরুদ্ধে মাদকের দু’টি মামলা বিচারাধীন আছে। এ মাদকদ্রব্য উদ্ধারের ঘটনায় মাদক কারবারী উজ্জল রায়সহ তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আল আমিন জানান।
নড়াইলের মাদকসম্রাট কথিত সাংবাদিক উজ্জ্বল রায়ের আস্তানায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা, ফেন্সিডিল, গাঁজা ও মাদকসেবনের উপকরণ উদ্ধার করেছে। এ সময় উজ্জ্বল রায়ের স্ত্রী দিপালী রায়কে আটক করা হয়। তবে উজ্জ্বল রায়কে আটক করা যায়নি।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ ইমরান, সহকারী কমিশনার মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মুমিন, নড়াইল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, পরিদর্শক বিদ্যুৎ বিহারী নাথসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মী।
এলাকাবাসী সূত্রে থেকে জানাগেছে, নড়াইল পৌরসভায় প্রশাসনের নাকের ডকায় বসে সাংবাদিক সেজে উজ্জ্বল রায় দীর্ঘবছর ধরে মাদক সরবরাহ ও ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিসহ অলৌকিক ক্ষমতাধরদের ছত্রছায়ায় দম্ভের সাথে মাদক ওপেন সিক্রেট বেঁচা-কেনা করে আসছিলো। এ ছাড়া শহরের কথিত আছে, উজ্জ্বল রায়ের আস্তানায় নিয়ম মেনে চলার মানুষরাও আসে, নিয়মের বাইরের মানুষেরও আনাগোনাা চলে প্রতিনিয়ত। এর আগেও সে একাধিকবার আটক হয়েছে। তার নামে নড়াইল অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত ও যশোর জেলা জজ আদালতে একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে।
এদিকে, উজ্জ্বল রায়ের ভাড়া বাসায় অভিযানের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন মন্তব্য এসেছে। এ সব মন্তব্যে বলা হয়েছে, উজ্জ্বল রায়কে যে সকল পত্র-পত্রিকা সাংবাদিক বানিয়েছেন তারা দ্রুত তাকে বাতিল ঘোষণা না করলে সে সব পত্র-পত্রিকার নাম প্রকাশ করা হবে এবং যাদের ছত্রছায়া ও সরাসরি মদদে নড়াইল শহরে দীর্ঘবছর ধরে বুকফুলিয়ে মাদক বেচাকেনা করে আসছে তাদের নামও প্রকাশ করা হবে।